December 1, 2023, 1:58 pm

নোটিশ:
নিয়মিত পড়ুন এবং বিজ্ঞাপন দিন
সংবাদ শিরোনাম:
তেতুলিয়ায় নিখোঁজের, ৫ দিন পর, যুবকের মরদেহ উদ্ধার একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জেরে,পদ্মায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে নৌপুলিশ অভিযান, আটক-২ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা মার্কা) আজ সন্ধ্যায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হচ্ছে পার্বতীপুরে কৃষকের মাঝে কৃষি উপকরণ বিতরণ বিএনপির আরও ১০ নেতাকর্মী আটক যুবদল নেতার বাড়িতে হামলা मेला लखदाता सरकार, काकी गांव रामा मंडी, जालंधर, बूटा राम ਮੇਲਾ ਲੱਖ ਦਾਤਾ ਸਰਕਾਰ ਦਾ, ਕਾਕੀ ਪਿੰਡ ਰਾਮਾ ਮੰਡੀ, ਜਲੰਧਰ ਬੂਟਾ ਰਾਮ পটুয়াখালী ৪ আসনে আ’লীগের মনোনয়নে আশাবাদী দুই ডজন হেবিওয়েট প্রার্থীরা মতলব উত্তরে অটোরিকশার ধাক্কায় স্কুলছাএী নিহত

বীর নারায়নপুর গ্রামের দেড় কিলোমিটার সরকারি রাস্তা এখন দখলদারদের উচ্ছে আর কপিক্ষেত

মনিরুজ্জামান স্টাফ রিপোর্টার যশোরঃ
যশোহর সদর উপজেলার বীর নারায়নপুর গ্রামে ৪’শ শতক সরকারি কাচাঁ রাস্তা এখন সাধারণের উচ্ছে আর কপি চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে। ওই রাস্তায় মানুষের যাতায়াত ও গরুর গাড়ি চলাচল এখন শুধুই স্মৃতি। প্রতারণার মাধ্যমে নিজেদের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়ে প্রায় আড়াই যুগ রাস্তাটি অপরিকল্পিতভাবে শাসন করছে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী। এর ফলে দুটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে।
গ্রাম দুটির মানুষ একাট্টা হয়ে ১৯৬২ সালের রেকর্ড ও ম্যাপ এর আলোকে রাস্তাটি উদ্ধারের দাবি করেছেন যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছে। এরইমধ্যে এলাকাবাসী মেম্বার কে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করেছেন। সরেজমিনে জানা গেছে ১৯৬২ সালের ম্যাপে যশোর সদর উপজেলার ১৪৩ নম্বর মৌজায় ২৬ নম্বর দাগে বীর নারায়নপুর ঘোষপাড়ার মোড় থেকে আজিমুদ্দিনের লিচুবাগান পর্যন্ত চার’শ শতক জমির উপর সরকারি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এখন তার চিহ্ন প্রায় বিলীন। এখনো কিছু অংশ রাস্তা থাকলেও তা দখলদারদের গাছ লাগানো। ১৯৮৭ সালে এখানে ১৮ ফিট থেকে ৪৩ ফিট পর্যন্ত চওড়া রাস্তা থাকলেও এখানে এখন উচ্ছে আর কফি চাষ করা হচ্ছে। এলাকার প্রভাবশালী ১২ জন ব্যক্তি গোটা রাস্তা দখল নিয়ে আবাদি জমি বানিয়েছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
দখলদার ব্যাক্তিরা হল এলাকার আজিমউদ্দিন আলতাফ, আন্জু বেগম, চিত্র ঘোষ, রবীণ, শরিফুল ইসলাম, আব্দুর রব, নিয়ারি বেগম, বাবু সন্তোষ আনন্দ সুভাষ, সহ ১২ জন প্রভাবশালী ভুয়া রেকর্ড করে ওই রাস্তার জমির মালিকানা দাবি করছেন। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ১৯৮৭ সালে সরকারি আমিন ছব্দুল ইসলামকে চাপ দিয়ে নিজেদের দরিদ্র আত্মীয়দের নামে রাস্তা রেকর্ড করিয়ে নেন বলে অভিযোগ। যাদেরকে দরিদ্র সাজানো হয় তারা হলেন ওই এলাকার জয়নাল খাঁ, লুৎফর রহমান, জাহানারা বেগম, সহ ৬/৭ জন। এদের দিয়ে পরবর্তীতে অন্যদের কাছে বিক্রি দেখিয়ে তারা দখলে নিচ্ছে চক্রটি। দখলীয় অংশে রাস্তার অস্তিত্ব না থাকলেও ওই অংশের দুই পাশে সংযোগ রাস্তা জানান দিচ্ছে। প্রভাবশালীদের দখলে যাওয়া দেড় কিলোমিটার সরকারী রাস্তা ছিলো।
এলাকার জহুর আলীর ছেলে ছব্দুল ইসলাম বয়োবৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাক, আমিন আলী, এলাকার জমি পরিমাপ কারী মোঃইসমাইল হোসেন সহ অনেকে আমাদের কে জানান প্রায় আড়াই যুগ বেদখলে বীর নারায়ণপুরের এই রাস্তাটি।
এই এলাকায় খুব বেশি সবজি চাষ হয়। তবে ওই রাস্তাটি না থাকায় যোগাযোগ সমস্যা হচ্ছে। মাঠ থেকে সবজি বা ফসল নিয়ে গ্রাম ঘুরে আসতে হয়। অনেকদূর ঘুরে আসতে হচ্ছে বীর নারায়নপুর ও শর্শনাদাহ গ্রামের মানুষকে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন ১৯৮৭ সালে রাস্তা দখলের পর ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পাননি। সন্ত্রাসীদের ওই হোতা প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হওয়ার পর থেকে এলাকার সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
এলাকাবাসী এই জমি উদ্ধার করে সরকারি খাস খতিয়ান জমির হিসেবে বি এস রেকর্ড করার দাবি জানিয়েছেন। তারা এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে যশোর জেলা প্রশাসক ও ভূমি বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এলাকাবাসীর মধ্যে ইসমাইল হোসেন ১৯৬২ সালের ম্যাপ ও ১৯৮৭ সালের রেকর্ড ও হাজির করে দেখান দখলি জমিতে দিব্বি লম্বা ও চওড়া রাস্তা রয়েছে। যার পরিমাণ ৪’শ শতক এর মত। আর ৮৮ সালের রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে সরকারি রাস্তা নেই সবই ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি।
দখলকারী হিসেবে অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম আমাদেরকে জানান,তার বড় ভাই ও দাদা ওই জমি দখল করে আসছেন। তাদের মধ্যে দুই কাটা মত আছে। এছাড়া তাঁর মত এলাকার অনেকেই রাস্তার জমি দখলে নিয়ে উচ্ছে চাষ করছেন। তিনি বলেন যদি সরকার রাস্ত চায় তাহলে তারা জমি ফেরত দেবেন। তিনিও সরকারি রাস্তার পক্ষে।
স্থানীয় মেম্বার শওকত আলী জানান,সরকারি রাস্তা বেদখল হয়ে আছে দীর্ঘদিন। আমি রাস্তার জন্য এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধন করেছি। তিনি বলেন ফসল আনতে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এ রাস্তাটি আবার চালু করতে হবে। এ ব্যাপারে দ্রুত উপর মহলের সহায়তা চান তিনি।

লেবুতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানিয়েছেন,বীর নারায়নপুর গ্রামের সরকারি রাস্তাটি এখন পাবলিকের দখলে এটা সত্য। আমি নিজে সরেজমিনে যেয়ে দেখে আসছি। দীর্ঘদিন ওখানে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় কতিপয় দখলবাজ। তারা ৮৭/ ৮৮ সালের রেকর্ড বলে ভোগ দখল করছে বলে প্রচার করছেন। দেরিতে হলেও এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করেছেন। দ্রুতই এ ব্যাপারে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তার জমি উদ্ধার করে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হাফিজুল হক বলেন,আমরা দ্রুতই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবো। কেস টি জিপি মহোদয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে।
লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মিলন জানিয়েছেন,এলাকাবাসীর সাথে তিনিও একাট্টা। তিনি বলেন অভিযোগে সাক্ষ্য গণস্বাক্ষরের সব সত্য না হলে ওঅভিযোগের বক্তব্য সবই সত্য। সরকারি রাস্তার জমি পাবলিকের ভোগ দখলে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। এলাকার উন্নয়ন ও গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য রাস্তা অতীব জরুরী। একটি রাস্তা হারিয়ে যাবে এটা হতে পারে না। বীর নারায়নপুর ওপাশের গ্রাম শর্শনাদাহ গ্রামের জন্য রাস্তাটি খুবই প্রয়োজন। তিনি এলাকাবাসীর সাথে রয়েছেন। এখন জেলা প্রশাসকের দ্রুত হস্তক্ষেপ চান।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All Rights Reserved sokolerbarta.com