December 1, 2023, 11:44 pm
রশিদুল ইসলাম পাটগ্রাম (লালমনিরহাট)প্রতিনিধি:
সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধরলা, সানিয়াজান ও তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন ও শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ও ফসলি জমি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মন্ত্রিপরিষদের কড়া নির্দেশ উপেক্ষা করে দেদারছে নদী থেকে বালু তুলে চলছে একটি দুষ্টচক্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ধরলা, সানিয়াজান ও তিস্তা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তা ট্রাকে তোলা হচ্ছে। বালু ব্যবসায়ীদের একটি চক্র অবৈধভাবে নদী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রলি বালু তুলছে। এসব বালু মহাসড়কের পাশাপাশি পাটগ্রাম পৌরসভা, বুড়িমারীসহ বিভিন্ন এলাকায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এতে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক ও যান চলাচলে দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে বেশি বালু উত্তোলন ও পরিবহন হচ্ছে পাটগ্রাম পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সোহাগপুর, ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাবার ড্যাম এলাকা, বুড়িমারী ইউনিয়নের গুঁড়িয়াটারী, বাউরা ইউনিয়নের সানিয়াজান নদী ও দহগ্রাম ইউনিয়নের সর্দারপাড়া এলাকার তিস্তা নদী থেকে।
স্থানীয় ট্রাকচালক এনামুল হক বলেন, ‘লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়কের ঘুণ্টি, বেলতলী, মির্জার কোর্টসহ বিভিন্ন এলাকায় বালু স্তূপ করে রাখার পর ট্রাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে পাটগ্রাম পৌরসভার সোহাগপুর এলাকার মতিবর রহমান বলেন, ‘ধরলা নদী থেকে বালু তুলে ট্রলিতে নিয়ে যাওয়ায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। চলাচলের রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ১১ অক্টোবর অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।’
এ ব্যাপারে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহারের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফরকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘নদীর যে স্থান থেকে বালু উত্তোলন হচ্ছে, সেই স্থানের নাম দিন। আমরা ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, কেউ যদি বালুমহাল ইজারা নেয় তাহলে শর্তানুযায়ী বালু তুলতে হবে। আর যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তাহলে স্থানীয় প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে। তাই বিষয়টি প্রথমে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করতে হবে