December 1, 2023, 10:16 pm
এমরান হোসেন,জামালপুর জেলা প্রতিনিধি:
জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জে শীতের সকালে আগুন পোহাতে গিয়ে শিশু জান্নাত আরা (৮) দগ্ধ হওয়ার পর টাকার অভাবে বিনাচিকিৎসায় বাড়ীতে পরে থাকার সংবাদ পেয়ে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন বকশীগঞ্জের ইউএনও মুনমুন জাহান লিজা।
আগুনে দগ্ধ হয়ে বিনাচিকিৎসায় ১৫ দিন ধরে এক শিশুর কষ্টের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে তার স্বজনদের অফিসে আসতে খবর পাঠান ইউএনও।গত বুধবার ২৭শে জানুয়ারি ওই শিশুটিকে সঙ্গে নিয়ে তার দাদা অফিসে এলে অবস্থার অবনতি দেখে শিশু জান্নাত আরা(৮) কে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান ইউএনও। তিনি ব্যক্তিগতভাবে তাৎক্ষণিক অর্থ সহায়তা করেন এবং চিকিৎসার ব্যয় প্রদানের আশ্বাস দেন।
শিশু জান্নাত আরা(৮) বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর আউলপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে। ১৫ দিন আগে সমবয়সীদের সঙ্গে আগুন পোহাতে গিয়ে কাপড়ে আগুন লেগে শরীরেট এক পাশের পা থেকে কাঁধ পর্যন্ত পুড়ে যায়। এতদিন ধরে তাকে লতাপাতা দিয়ে কবিরাজি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। শিশু জান্নাত আরার জন্মের দু’মাস পর তার মা অন্যত্র পালিয়ে যান। তাকে দিনমজুর দাদা মইনুল ইসলামের কাছে রেখে পেটের তাগিদে রিকশাচালক পিতাও চলে যান ঢাকায়। এতদিন ধরে সে দাদার কাছেই প্রতিপালিত হচ্ছিল। পরিবারের দারিদ্র্যতার কারণে তার শীত নিবারণের উপযুক্ত পোশাক ছিল না। তাই প্রায়ই সমবয়সীদের সঙ্গে সে আগুন পোহাতো।
দাদা মইনুল ইসলাম জানান, ‘আমরা দিনমজুর বাপু। ঠিকমুতো চাইড্ডে ভাতই পাইনে, জারের পোশাক কিনমু কিবেই! নাতনিডার পুরেন এডা ছিঁড়ে জাম্ফার আছে। ওইডেই পিন্দে আর আগুন তাপায়ে জার ছাড়াইতো। আগুন তাপাতে না গেলে ও তো পুড়ত না। ইউএনও স্যার খবর পাঠাইছিল, গেলে টেহাপয়সা দিয়ে মমিসিং হাসপাতালো পাঠাইছে। কইছে তিনি আরো দিবো।’
এ বিষয়ে ইউএনও মুনমুন জাহান লিজা জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত আইডিতে জান্নাতের অবস্থা বর্ণনা করে সহযোগিতা চান। ফেসবুক স্ট্যাটাসটি আমার নজরে আসলে আমি জান্নাতের পরিবারকে খবর পাঠাই। তারা এলে জান্নাতের অবস্থার অবনতি দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আমার ব্যক্তিগত সহযোগিতা ছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে।’