September 23, 2023, 1:34 am
মো: মানিক উদ্দিন
রিপোর্টার কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় একটি বিলুপ্ত প্রজাতির মেছোবাঘ হত্যা করা হয়েছে।কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের বালিয়া পাড়ার বড় ব্রিজ নামক স্থানে একটি মেছোবাঘ মৃত অবস্থায় পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
কে বা কারা এই বিরল প্রজাতির মেছোবাঘ টিকে হত্যা করে ফেলে যাই তা এখনো জানা যাইনি।
তবে অনেকেই ধারণা করছে যে,ব্যস্ত সড়ক হওয়াই কোন কারনে রাস্তা পারা-পারের সময় গাড়ির ধাক্কায় মারা যেতে পারে।
কুষ্টিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাঝে মধ্যে মেছোবাঘ দেখতে পাওয়া যায়। কয়েকমাস আগেও দরবেশ পুর নামক গ্রামে একটি
মেছোবাঘ হত্যা করে স্থানীয় লোকজন।
এক সময় এই বিড়াল প্রজাতির মেছোবাঘ বাংলাদেশে অনেক থাকলেও এখন আর নেই। তাই বাংলাদেশ সরকার এই প্রজাতিকে বিলুপ্ত প্রজাতি বলে ঘোষনা করেছে।
এছাড়াও নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে এই প্রাণী খাদ্য সংকটে পরেছে। খাদ্য সংকটের জন্য অসুস্থ, ওজন কমে যাওয়া সহ নানা ধরনের হুমকির মুখে পরতে হচ্ছে।
প্রত্যেকটা প্রাণীর জন্য পরিবেশ হল একটি অপরিহার্য বিষয়। যার ব্যতিক্রম নয় বন্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও। পরিবেশ নষ্ট, ধ্বংস করা সহ নানা প্রকার সমস্যায় আজ বিলুপ্তির পথে।
প্রত্যেক প্রাণীর একটি আবাস্থল প্রয়োজন, কিন্তুু আধুনিক সমাজের নানা মুখী প্রয়োজন মিটানোর জন্য প্রতিদিন লাখ লাখ গাছ কাটা হচ্ছে। জ্বালানী কাঠ, কাঁচামাল, আসবাবপত্র, কয়লা, কল-কারখানা সহ নানা প্রয়োজনে বন উজাড় করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যার ফলে বন্য প্রাণী গুলো তাদের থাকার জায়গা হারাচ্ছে। এ কারনে অনেক প্রাণী লোকালয়ে চলে আসছে।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন এর উদাসীনতা একটি প্রধান কারন। অন্য সব দেশ যখন বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী রক্ষায় নানা ধরনের প্রদক্ষেপ গ্রহন করছে, ঠিক সে সময় আমাদের দেশে বন্য প্রাণী রক্ষায় তেমন কোনো কিছু চোখে পরেনা। সকল প্রকার চোরা শিকারিদের আইনের আওতাই আনতে হবে। স্থানীয় প্রাণী বিভাগ, বন বিভাগ যদি বিলুপ্ত প্রাণী রক্ষায় সচেতন হয়। তবে এখনো এই বিলুপ্ত প্রাণী রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
আর সর্বপরি বলতে গেলে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় অনেকাংশে ভ্রান্ত ধারনা, কুসংস্কার রয়ে গেছে। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় বসবাস করেও মানুষ তার ভ্রান্ত মানসিক চিন্তা চেতনা থেকে বেড়িয়ে আস্তে পারেনি।
অনেকেই মনে করে এটা ছোটো জাতের বাঘ।যা মানুষ, গরু,ছাগল, এই সব খাই। তাই এটা বিপদজনক, দেখা মাত্র মেরে ফেলতে হবে। এই রকম কিছু ধারনা সবার মধ্যে বিরাজ করে।
কিন্তুু এটা হল ভুল ধারনা, তার কারন হলো এটা এক প্রকার বিড়াল প্রজাতির প্রাণী। যা মাছ,পোকা মাকড়, বুনো মুরগী, এই সব খেয়ে থাকে।
স্থানীয় প্রশাসন এর নজরদারি,সচেতনমুলক প্রচার এমন কোনো কিছুই করে না। যাতে করে সাধারণ মানুষ এই মেছোবাঘ সহ সকল প্রকার বিলুপ্ত প্রাণীর বিষয়ে জানতে পারে। আর এর ফলে প্রতি নিয়ত বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এই সব নানা প্রজাতির হুমকির মুখে থাকা প্রাণী গুলো।
সর্বোপরি জেলা প্রশাসনকে এই বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণীদের সুরক্ষায় দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।