December 1, 2023, 11:27 pm
মিলন হোসেন রিপোর্টার আশাশুনি:
হত্যার ৩০ ঘন্টার মধ্যে আসামী গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার
সাতক্ষীরা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, পিপিএম(বার) মহোদয়ের দিক নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আছাদুজ্জামান ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, দেবহাটা সার্কেল জনাব মোঃ শেখ ইয়াছিন আলী স্যারের তত্ত্বাবধানে এবং পিবিআই সাতক্ষীরা এর সহযোগীতায় আশাশুনি থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ জনাব মোহাম্মাদ গোলাম কবির ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এর নেতৃত্বে অত্র মামলা নং-২৩(১০)২০২০ এর আসামী মোঃ মোবাশশির হোসেন ওরফে মুবাশশির (২২), পিং-আঃ মজিদ মোড়ল, সাং-বৈকরঝুটি, থানা-আশাশুনি, জেলা-সাতক্ষীরাকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনাক্রমঃ আসামী ও ভিকটিম মৃত চন্দ্র শেখর (২২) একই এলাকার অধিবাসী এবং বাল্য বন্ধু। আসামী মোবাশশির কল্পনা (কাল্পনিক নাম) নামের একটি মেয়ের সাথে প্রায় ৬ বছর যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক করে। বিষয়টি কল্পনার পরিবার জানিতে পারিয়া কল্পনাকে তাহার মামার বাসায় রাখিয়া পড়াশুনা করায়। যাহার ফলে আসামীর সাথে কল্পনার সর্ম্পকের কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারনে কল্পনা ৬/৭ মাস পূর্বে বাড়ীতে আসে। আসামী ও কল্পনার মধ্যে পূনরায় মোবাইল ফোনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গভীর হয়। এদিকে আসামীর বন্ধু ভিকটিম মৃত চন্দ্র শেখর প্রায় এক/দেড় মাস পূর্বে থেকে আসামী ও কল্পনার মধ্যে প্রেমের সম্পর্কটি জানিতে পারে। ভিকটিম মৃত চন্দ্র শেখরও কল্পনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়িয়া তুলিতে চায়। কিন্তু কল্পনা ইহাতে রাজি না হওয়ায় প্রায়শই আসামীকে কল্পনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক করিয়া দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। গত ইং-১৮/১০/২০২০ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭.০০ ঘটিকায় একটি দোকানে কেরাম বোর্ড খেলার সময় ভিকটিম মৃত চন্দ্র শেখর আসামী মোবাশশিরকে কল্পনার সাথে রাতেই দেখা করিয়া দেওয়ার জন্য বলে এবং না দিলে সকাল বেলা কল্পনা পরিবার সহ এলাকায় সবাইকে জানাইয়া দিবে বলিয়া মানসিক চাপ দিয়া বাড়ীতে চলিয়া আসে। আসামীও পরক্ষনেই মৃত চন্দ্র শেখরকে রাতের মধ্যেই হত্যার করার পরিকল্পনা করে। আসামী তাহার হত্যার মিশন সম্পন্ন করার জন্য ভিকটিমের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে এবং রাতে তাহার প্রেমিকাকে নিয়ে আসার কথা বলে দুইজন এক সাথে ঘুমানোর পরিকল্পনা করে। মৃত চন্দ্র শেখর রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করিয়া রাত্র অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার দিকে ভিকটিমের বাবার মৎস্য ঘেরের ঘরে যায়। আসামীও ভিকটিমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিয়া রাত্র অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিমের মৎস্য ঘেরের ঘরে যায় এবং দুইজনেই একই বিছানায় শুয়ে অপেক্ষা করিতে থাকে। ইং-১৯/১০/২০২০ তারিখ রাত্র অনুমান ১২.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম ঘুমাইয়া পড়িলে আসামী মোবাশশির তাহার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাহার হত্যা মিশন সম্পন্ন করিতে চন্দ্র শেখরের বুকের উপরে উঠিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চাপিয়া ধরে। চন্দ্র শেখর ধস্তাধস্তি করিয়া শোয়ার চৌকি থেকে নিচে পড়িয়া গোংরাইতে থাকে। আসামী পূনরায় হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের গলা চাপিয়া ধরিয়া মুত্যু নিশ্চিত করে। আসামী ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করিয়া ঘরের বিছানা পরিপাটি করিয়া ভিকটিমের পরিহিত লুঙ্গি, জুতা ও মোবাইল বাহিরে বের করিয়া রাখে। পরবর্তীতে আসামী ভিকটিম মৃত চন্দ্র শেখর এর লাশকে গোপন করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের দুই হাত ধরিয়া টানিয়া ঘর হইতে বাহির করিয়া টানা হেচড়া করিয়া ঘেরের পাড়ের নিচে নিয়ে আসে। আসামী ভিকটিমের পা ধরিয়া ঘেরের ভিতরে স্বজোরে ধাক্কা দিলে ভিকটিমের লাশ পানিতে পড়িয়া তলাইয়া যায়। পরবর্তীতে আসামী হত্যার পর ভিকটিমের ব্যবহৃত লুঙ্গি, জুতা, মোবাইল ও সিম কার্ড বিভিন্ন ঘেরের পানির মধ্যে ফেলিয়া দেয়। ভিকটিমের মৃত্যুকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে আসামী সকাল অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় সাতক্ষীরা সদরে যাইয়া ভিকটিমের ব্যবহৃত সিম কার্ড দিয়া ভিকটিমের বাবার মোবাইলে ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা চাহিয়া ভিকটিমের বাবার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বারে এসএমএম করে। পরবর্তীতে ইং-২০/১০/২০২০ তারিখ এই সংক্রান্তে মামলার রুজু হওয়ার পর পরই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীকে সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতার করা হয়। আসামীর স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে ঘেরের পানির মধ্যে হইতে ভিকটিমের পরিহিত লুঙ্গি ও জুতা, ডোবা পনির মধ্যে হইতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং রাস্তার পাশে মাটিতে পুতে রাখা অবস্থায় ভিকটিমের ব্যবহৃত সিম উদ্ধার করা হয়।