September 23, 2023, 2:04 am
মোঃ নাদিরুজ্জামান আজমল,
অষ্টগ্রাম,কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি।
দীর্ঘদিন যাবত অষ্টগ্রামের ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে দেয়া নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। এতে হাওড় উপজেলাটির জরুরী রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৬ বছর পূর্বে জরুরী রোগীদের সেবার জন্য অষ্টগ্রাম হাসপাতালে দেয়া ওই নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি এখন অচল।
হাওর অধ্যুষিত উপজেলা হওয়ায় অষ্টগ্রামে প্রাথমিক চিকিৎসা পর প্রতিদিন জরুরী বিভাগের চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়ে থাকে। যেখানে নৌকাযোগে অষ্টগ্রাম হতে জেলা সদরে যেতে সময়ের প্রয়োজন ৫-৭ ঘন্টা। আর অন্য বিকল্প পথে চলাচলের কোনো সুবিধা নেই।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ সকল রোগীদের চিকিৎসা সেবা দ্রুত ব্যবস্থার জন্য প্রতিটি হাওর উপজেলায় একটি করে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হলেও কোনো চালক না থাকায় সম্প্রতি অষ্টগ্রামের নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি ফেরত দেয়া হয়।
খবর নিয়ে জানা যায়, চালক না থাকায় গত ৩ বছরে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়ে কোনো রোগীর সেবাই দেয়া যায়নি। কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা জানান, নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটির গতি ছিল অত্যন্ত কম। যে কারণে অষ্টগ্রাম হতে নদীপথে ৫ ঘন্টা সময় লাগতো পার্শ্ববর্তী উপজেলা কুলিয়ারচর পৌঁছাতে। এছাড়াও নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি চলাচলের জন্য ফিটনেস না থাকায় নদীপথে চলাচলের জন্য ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। যে কারণে রোগীতদের অভিভাবকরা সেটিতে করে যেতে ইচ্ছুক ছিলেন না।
দীর্ঘদিন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির আড়ালে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিল ৬ লক্ষাধিক টাকার মূল্যের নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেরত পাঠানো হয়।
এদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পরিচালক ও উন্নয়ন প্রকল্প জাইকার অর্থায়নে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকার মূল্যের অত্যাধুনিক ইসিজি ও আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন দেয়া হয়। দুর্ভাগ্যবশত হাসপাতালে এখন পর্যন্ত কোনো টেকনিশিয়ান না থাকায় এসব যন্ত্রপাতিও অলস পড়ে আছে।
অন্যদিকে দাঁতের সহকারী ডেন্টাল সার্জন এবং এমপি ডেন্টল দুইজন চিকিৎসক থাকা স্বত্ত্বেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. ইসহাক বাবু জানান, বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বারবার চিঠি প্রেরণ করেও কোনো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছেনা।
আলট্রাসনোগ্রাফি করতে রোগীদের প্রতিদিন কিশোরগঞ্জ জেলা সদর অথবা নৌ-বন্দর ভৈরবে গিয়ে প্রচুর অর্থ ব্যয়সহ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, অষ্টগ্রাম হাসপাতালের চিকিৎসক থাকলেও প্রয়োজনীয় টেকনিশিয়ান না থাকায় ভাল চিকিৎসাও দিতে পারছেন না চিকিৎসকরা। আবার কিছু কিছু বিভাগের টেকনিশিয়ান থাকলেও যন্ত্রপাতির অভাবে সেবা দিতে পারছেন না।
এভাবেই দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে অষ্টগ্রাম ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ‘সেবা প্রদান’। শেখ প্রিন্স মিশু নামের একজন এক্স-রে টেকনিশিয়ান আউটসোর্সিং থেকে অষ্টগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ পেয়েছিলেন। দীর্ঘ ১৩ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করার পর বেতন না পেয়ে কর্মবিরতি দিয়ে বাড়ি চলে যান তিনি। এতে এক্সরে রোগীদের আবারও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে